ছোট্ট একটি ভূখণ্ড; বাংলাদেশ।

এম. আল-আমীন

বঙ্গোপসাগরের তীরে, ভারতের মধ্যবর্তী স্থলে ছোট্ট একটি ভূখণ্ড। আর সে ভূখন্ড নিয়েই কত কান্ড। লোভ শুধু এ ভূখন্ডকে নিয়েই নয়। লোভ এ ভূখন্ডের প্রতিটি বস্তুর জন্যে। কেননা, এটি ছিল তখনো পরাধীন। আর এ লোভের থাবা দিয়েছিল পাকিস্তান নামক একটি দেশ। তারা চেয়েছিল এটি দখল করে তাদের রাজত্ব হাসিল করে নিবে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান আলাদা আলাদা স্বাধীনতা অর্জন করলেও, বর্তমান বাংলাদেশ নামক ছোট ঐ ভূখণ্ডটি কিন্তু তখনো পরাধীন। শাসন করত তৎকালে পাকিস্তা। তারা সর্বপ্রথম হানা দেয় ১৯৫২ সালে আমাদের ভাষার উপর। কিন্তু সেসময় তরুণ ছাত্র জনতার বিপ্লবী প্রতিবাদ আর তাঁদের তাজা রক্তের বিনিময়ে সে দাবি আর বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে নি। অর্জন করে নিয়েছিল সেদিন বাংলা নামক একটি ভাষা। তারপরেই শুরু হলো আরো কতশত অত্যাচার, নির্যাতন। শুরু হলো তাদের স্বৈরাচারী শাসনামল। সহ্য করেছি অনেক, এবার আর নয়। আর এ মনোভাব নিয়েই সেদিন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সেই আহবানে দলমত নির্বিশেষে বাঙালিরা সেদিন এই ছোট্ট ভূখণ্ডকে রক্ষা করতে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মাঠে। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে পেয়েছি আমরা স্বাধীনতা। ভেঙেছিলাম সেদিন পরাধীনতার শিকল। সেই শিকল ভাঙতে দিতে হয়েছিল কতশত তরতাজা প্রাণ, আর মা-বোনদের ইজ্জত। সেই শহীদদের প্রাণ আর মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল আমাদের এই স্বাধীন ভূখন্ড। বিশ্বের বুকে অর্জিত করেছিল আরো একটি স্বাধীন দেশ। অর্জিত হয়েছিল আরো একটি পতাকা। আর সে বিজয় আর-তো কারো নয়, এটি শুধুই আমাদের। আজকের এই বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি সেইসব মহান শহীদ ও নির্যাতিতা মা-বোনদের। মহান স্রষ্টা তাঁদের ভালো রাখুক ওপারে।