গরীব অসহায় বাচ্চাদের ফ্রি'তে পড়িয়েছি,সাধ্যমত সাহায্য করেছি

Fahmira Akter Prova

আমার লাইফে সবচেয়ে বড় বিজয় থ্রিলিং,এক্সাইটিং মোমেন্ট ছিলো- করোনাকালীন সময়ে কিছু গরীব বাচ্চাদের ফ্রি'তে টিউশন দেয়া,সাথে সাথে জামা কাপড়,বই-খাতা দিয়ে হেল্প করা। আমি টিউশনি করাই প্রচুর। কিন্তু, একদমই ফ্রি'তে কখনো করাই নি৷ ২০ সালে যখন করোনা শুরু তখন আমাদের বাসার কাজের বুয়া এসে বললো,তার মেয়ের পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আগে তো স্কুলে যেতো,না পারলে স্যার ম্যামরা বুঝিয়ে দিতো। কিন্তু, এখন কেউ নাই যে বুঝিয়ে দিবে। উনি খুবই আফসোস আর দুঃখ নিয়ে কথাগুলো বলছিলো। শুনে খারাপ লাগলো৷ বললাম- খালা,কাল থেকে আপনার সাথে করে নিয়ে আইসেন,আমি ১ ঘণ্টা করে পড়ায়া দিবো। শুনে তো কি খুশি,খালা। কিভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তা নিয়ে অস্থির হয়ে পড়লো। আমি ঐ মেয়েকে পড়াতাম ১ ঘণ্টা করে। মেয়ে চমৎকার ব্রিলিয়ান্ট। ওর দেখাদেখি,ওর ক'জন গরীব বান্ধবী ও আসতে চাইলো,মানা করি নি৷ ৫ জন কে পড়াতাম,ফ্রি তে। তার উপর, কাপড়চোপড় পুরোনো বাট একদম নতুনের মতো যেগুলো দিয়ে দিতাম।খাতা-কলম,পেন্সিল সাধ্যমত দিতাম৷ একবার খালা আমাকে ২০০ টাকা দিতে চাইলো। হেসে বললাম- ওটা দিয়ে ওকে একটা ব্যাগ কিনে দিয়েন,দেখেন না ছিঁড়ে গেছে? এটা ছিলো আমার লাইফের সবচেয়ে বড় বিজয়। অশিক্ষার আলো দূর করার মাধ্যমে বিজয়। এর পর অবশ্য আমার স্টুডেন্ট রা আমাকে সবাই মিলে চকলেট উপহার দিয়েছে টাকা তুলে আমার জন্মদিনে। খালা আবার গ্রামে গেলে আমার জন্য ওনাদের গাছের আম,পেঁপে,লাউশাক,জাম্বুরা,কলা, হাঁসের ডিম ইত্যাদি নিয়ে আসতো আর বলতো- ট্যাকা তো দিবার পারি না। এগুলাই রাখেন,খুশি হয়ে দিলাম। এত বিশুদ্ধ আনন্দ আর খুশি,এত বড় বিজয় আমি কখনো অনুভব করি নি৷ সমাজের প্রতি কত শত দায়িত্ব যে আছে,ক'টাই পারি পালন করতে? ভেবেছি সাধ্যমতো করবো যতটুকই পারি। করোনাকালীন এ সময় বিশেষ করে অশিক্ষা আরো বেড়ে গেছে। অনেক গরীব বাচ্চা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজে নিয়োজিত হয়েছে৷ সেখান থেকে কিছু বাচ্চাকে কাজের পাশাপাশি অন্তত ফ্রি তে পড়াচ্ছি যাতে অন্তত কিছু শিক্ষাজ্ঞান থাকে৷ এটাই আমার জীবনের বড় বিজয়।এবং যেটা চলছে,চলবেই৷ ছবিটা খালার মেয়ের। আমার প্রথম বিজয়িনী স্টুডেন্ট।