Touhidul Islam Shishir
৭৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা মায়ের(সৈয়দা আলীমুন্নেছা) হাসিমুখ দেখাটাই আমার কাছে প্রতিদিনকার বিজয়। যিনি ২৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে প্রতিদিন প্রায় দুই মাইল হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসা করতেন। আমরা তিন ভাইয়ের মুখে হাসি ফুটাতে, অভাবের সংসারে যাতে আমাদের ছোটবড় সকল চাহিদা পূরণ হয় এমন চিন্তা থেকে তিনি রিকশায় না চড়ে পায়ের ওপর ধকল চালিয়ে টাকা বাঁচাতেন! সেই মমতাময়ী, মহিয়সী মায়ের ছায়াসঙ্গী আমি। জীবনকে সাজানোর অনেক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাইনি পরিবারের কথা, মায়ের কথা চিন্তা করে। তবু আমার কষ্টটা উড়ে যায় মায়ের হাসিমুখ দেখলে। ২০২০ সালে হঠাৎ করে মহামারী করোনার লক্ষন দেখা দিলে মাকে নিয়ে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ছিলাম আটদিন। এই আটদিনের অভিজ্ঞতা ছোট্র লিখায় শেষ করার মতো নয়। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় সুস্থ হয়ে উঠেন মা। এই বয়সে এসেও তিনি অলস বসে থাকতে রাজি নন। সকাল থেকেই সংসারের ছোট, বড় কাজে লেগে থাকেন অন্যদের সঙ্গে। অবসরে আম্মার কাছ থেকে পুরনো দিনের গল্প শুনি, টিভিতে কিংবা ইউটিউবে তাঁর প্রিয় লোকগান শুনাই। এভাবেই কেটে যায় সময়। আমার সংগ্রামী মায়ের মুখে হাসি ফুটানোই আমার বিজয়।