আমরা বীরের জাতি। আমরা বিজয় অর্জন করতে জানি

এম. জাহেদুর রহমান

আমাদের বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। যা অর্জন করেছি ১৯৭১ সালে। যুদ্ধ করেছি দীর্ঘ ৯ মাস। অর্জনের বিনিময়ে দিয়েছি রক্ত, ইজ্জত,জীবন। হারিয়েছি আত্মীয় স্বজন। আমরা সাধারণত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকেই দেশ মুক্তির আন্দোলন মনে করি। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য আমরা ১৯৪৭ এর ভারত উপমহাদেশ ভাগের পর থেকেই সংগ্রাম করে আসছি। বার বার পাকিস্তান সরকার আমাদেরকে বাধা দিয়েছে, অধিকার চিনিয়ে নিয়েছে, তাদের মত আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সূর্য সন্তানেরা পাকিস্তানিদের কোনো বিধিনিষেধের পরোয়া করেন নি। নিজেদের ভালো দিক বিবেচনা করেছেন পাকিস্তান সরকারের কাছে অধিকারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন অতঃপর দাবি আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন বহুবার। আমরা মাতৃভাষার জন্য ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি ফলস্রুতিতে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা ১৯৫৮ সালে আয়োব খান বিরুধী আন্দোলন করেছি। আমরা ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন করেছি। ১৯৬৯ সালে গণ অভ্যূত্থান আন্দোলন করেছি। আমরা ১৯৭০ সালে জালিমদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি কিন্তু ওরা আমাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। আমরা যখন দেখলাম আমাদের পিঠ দেয়ালে লেগে গেছে তখন আর চুপ থাকিনি। বাংলাদেশের সূর্য সন্তান আমাদের অহংকার বাংলাদেশের গর্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বজ্রকন্ঠে স্বধীনতা ঘোষণা করার মাধ্যমে দেশের সর্ব পেশার মানুষকে পাকিস্তানী বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান করেন। তিনি বজ্রকন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার বানী,, "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম" এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম " এই সাহসী উচ্চারণ বুকে লালন করেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছিলেন প্রায় ৩০ লক্ষ বীর। পাকিস্তানী জালেমদের জুলুমের স্বীকার হয়ে ইজ্জত হারিয়েছেন প্রায় দুই লক্ষ মা বোন। উনাদের আত্মত্যাগের ফসল, আমাদের বিজয়। ১৯৭১ সালে ৯মাস যুদ্ধের পর পাক বাহিনী নিজেদের পরাজয় মেনে নিয়েছিলো এবং নিজ হাতে আমাদের বিজয়ের দলিলে সাক্ষর করেছিলো। ১৯৭১ সালের সেই তারিখটা ছিলো ১৬ ডিসেম্বর। সময় ছিলো বিকাল ৪.৩১ মিনিট। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে "ঢাকা ক্লাব" থেকে সংগ্রহ করা "টেবিলের" উপর "INSTRUMENT OF SURRENDER" নামক " দলিলে বাংলাদেশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরার সামনে পাক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী সাক্ষর করেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আত্মত্যাগ আমাদেরকে উপহার দিয়েছে একটা স্বাধীন ভূখণ্ড, যেই ভূখণ্ড আমাদের "মা" সমতুল্য সম্মানের। ১৯৭১ সালে যেই মায়ের সন্তানরা জীবন দিয়ে "মা-মাতৃভূমিকে" স্বাধিন করেছিলেন। ইনশাআল্লাহ আমরাও একি চেতনা লালন করে বলতে পারি,, তোমি শুধু একটা ভূখণ্ড নয় হে জন্মভূমি তোমি ১৮ কোটি সন্তানের জননী.. যদি আবার কোনো হায়নারা তোমার দিকে তাখায় চোখ তুলি.. আমরা প্রতিবাদ করবো. প্রতিরোধ করবো.. জীবন দিয়ে তিনাঞ্জলি......