Naznin Nahar Tonny
আমার লাইফে চ্যালেঞ্জের বিজয়ের গল্প হচ্ছে - বাইক চালানো শিখা। একজন মেয়ে হবার পরেও শত বাঁধা পেরিয়ে, সাইকেল চালানো তারপর বাইক/স্কুটি চালানো হচ্ছে আমার নেয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লাইফে৷ আমি যখন গ্রামে থাকতাম, তখন থেকেই সাইকেল চালানোর প্রতি একটা ঝোঁক ছিলো। মেয়ে বলে সাইকেল চালানোকে নাক ছিঁটকাতো অনেক জন। কত শত বার সাইকেল থেকে পড়ে যে পা,হাঁটু ছিলে ফেলেছি তা বলার বাহিরে। তবুও ইচ্ছেশক্তি হারাই নি৷ ঢাকায় আসার পর আমাদের কলোনিতে চালাতাম সাইকেল৷ ঢাকার মানুষ গ্রামের থেকে একটু কম নাক ছিঁটকাতো এ ব্যাপারে৷ SSC দেবার সময়, বাবাকে বললাম- আমাকে একটা স্কুটি কিনে দিতে। মেয়েরা যেটা চালায়৷ বাবার ঘোর আপত্তি। মেয়ে হয়ে কেনো চালাবো এসব। সমাজ কি বলবে? একপ্রকার জেদ ধরলাম৷ বাবা বললো- আচ্ছা ভালো রেজাল্ট করো,তারপর দেখা যাবে। A+ পাও আগে। যথারীতি A+ পেলাম। বাবা নিরুপায় হয়ে কিনে দিলো।তবে চালানোর ক্ষেত্রে দিলো নিষেধাজ্ঞা! আমি তবুও আমাদের বাড়ির ছোট্ট খালি জায়গাতে চালাতাম৷ সময়ের সাথে সাথে বাবা মেনে নিছে। এখন বাইরেও স্কুটি নিয়ে যাই৷ বাজার করি,ক্লাস করি ইত্যাদি ইত্যাদি। মেয়ে বলে আর কতকাল পিছিয়ে থাকবো? এখন আমি নিজেই কলেজে যাই স্কুটি'তে করে৷ এক অন্যরকম ভালোলাগা৷ বাসের ঝামেলা নাই,কোনোরকম হয়রানির সমস্যা নাই৷ নির্ঝঞ্ঝাট। নিজ স্কুটি তে করে যাই আসি। প্রতিবেশী রাও খুব এপ্রিশিয়েট করে যারা একসময় বাঁকা চোখে দেখতো। আমার লাইফের চ্যালেঞ্জিং ঘটনা এটাই যে- মেয়ে বলে এটা করা যাবে না,ওটা করা যাবে না,ওমা বাইক চালাবে,এসবাে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাইক চালানো শিখেছি এবং নিজেই নিজেকে ক্যারি করতে পারি। সমাজের তথাকথিত বাঁধা উপেক্ষা করে আমি যে নিজেই চলতে পারি,নিজেই শিখেছি,এই বিজয়ের মাসে এটাই আমার বড় বিজয়।