জীবনের শেষ যুদ্ব।

Md nadim

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু ।সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালো ।আল্লাহ যেন সবাইকে ভালো রাখার তৌফিক দান করুন আমিন। আসুন পরিচয় পর্ব টা শুরু করা যাক আমি মোঃ নাদিম। ‌‌ জন্মস্থান মহাখালীতে। পড়াশোনা এইচএসসি কমপ্লিট করেছি 2015 তে। মা বাবা ভাই বোন নিয়ে একটি ছোট্ট সংসার। আমি পরিবারের বড় এবং আমার ছোট হচ্ছে তিন বোন। বাবা গার্মেন্টসে চাকরি করে মা গৃহিনী। বোন 3 জনই পড়াশোনার সাথে আছে। আসলে পরিবারের চাপ টা বুঝতে শিখেছি যখন আমি এসএসসি কমপ্লিট করি। হঠাৎ করেই মা ঋণ নিয়ে টেনশনে পড়ে যায়। সংসারের হাল ধরতে হয় আমাকেও। জীবনে অনেক কিছু করেছি কিন্তু কোথাও সফলতা পায়নি। আল্লাহর ইচ্ছা হয়তোবা ছিল অন্য জায়গায়। তারপরও হাল ছেড়ে দেয়নি চেষ্টা করি গেছি। সবসময় ভাবতাম যে আমার ভাগ্যে বুঝি কিছুই লেখা নেই সব সময় মনে হতো একটা শূন্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি আমি। আমার জীবনে আমি প্রথম জয়েন দিই প্রাণ আরএফএল কোম্পানি লিমিটেডের সৌজন্যে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেখান থেকে আমার চাকরি জীবনের পথ চলা শুরু। পড়াশোনার পাশাপাশি ইভেন্টের কাজটাও করতাম। কিন্তু তেমন কোন লাভ ছিল না কারণ পড়াশোনা প্লাস চাকরি একসাথে দুইটাই সম্ভব হয়ে ওঠেনা অনেক সময়। অনেক কষ্টে পরিশেষে এইচএসসি কমপ্লিট করি। এরইমধ্যে ভার্সিটির ভর্তি যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আমার রেজাল্ট তেমন ভালো ছিল না। তাই একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। বিবিএ কমপ্লিট করার চেষ্টা করি কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তাও সম্ভব হয়ে ওঠেনা। বিবিএ সেমিস্টার ফি আমার আটকে যায় দুই বছরের একেতো পরিবারের সমস্যা তার উপরে আবার এই অর্থনৈতিক সমস্যার ২মিলিয়েই পড়াশোনা স্থগিত করে দিতে হয়। আমি থাকতাম তোমার খালি তে তো সেখানে যতদিন আমার নানী বেঁচে ছিল তাদের বাসায় থাকতে পেরেছি তারপর চলে আসতে হয় টঙ্গী স্টেশন রোড। বাবার চাকরিটাও হঠাৎ করেই চলে যায় তার অফিস চলে আসে উলুখোলা বাজার সেটা গাজীপুরে ভিতরে। আমরা সবাই এখানে শিফট হয়ে যাই। এখানে এসে প্রথম দিকে একটা এনজিওতে চাকরি নিলাম । তিন মাসের মধ্যে অনেক বদনাম কামিয়েছে কিন্তু সফলতা পায়নি। হিসাব-নিকাশের ব্যাপারটা একটু কম বুঝতাম আর এখানে পয়সার হিসাব টাও করতে হতো। 2 টাকা বেশি হলেও জবাব দিতে হতো আবার দুই টাকা কম হলেও জবাব দিতে হতো খুব প্রেসারে পড়ে এই চাকরিতে হাত থেকে ছুটে যায়। পরবর্তীতে একটা খালাত ভাইয়ের সাথে ইলেকট্রিকের কাজে যোগ দেই। মোটামুটি ইলেক্ট্রিকের কাজ সম্পূর্ণটা শিখি তারপরও একাটা লাইসেন্স এর কারণে এখানে বাঁধা পড়ে যায়। আসলে কি বলব ভাগ্যের হয়তোবা এটাও ছিল না। হতাশ হয়ে পরি। আর নিজের ভাগ্যকে দোষ দিতে থাকি। আসলে এখনকার সময়ে একটা ভালো চাকরি পাওয়া আর সোনার হরিণ হাতে পাওয়া একই ব্যাপার। যেখানেই ভালো একটা চাকরি নিতে যাই তারা চা নাস্তা খাওয়ার খাওয়ার জন্য এক লক্ষ্য বা তার অধিক চেয়ে বসে থাকে। আর সরকারি চাকরিতে সেটা যতটুকু কম বলা যায় ততটাই ভালো। আসলে আমরা মধ্যবিত্ত যারা আছি তারা লোকলজ্জার ভয়ে রাস্তায় যোগালেও দিতে পারি না আবার টাকার অভাবে একটা ভালো চাকরি ও নিতে পারিনা। শেষ পর্যন্ত দেখলাম আমাকে তো কষ্ট করতেই হয় সেটা যেভাবেই হোক। অবশেষে ঠিকানা হলো আমার গার্মেন্টস সেকশন। বাসা থেকে অনেকটা দূরে। এখন জীবনের লক্ষ্য একটাই এখান থেকেই আমাকে উন্নতি করে বের হতে হবে ধৈর্য ধারণ করতে হবে তবে আমার সফলতা আসবে আর এভাবেই করতে করতে শেষ হবে জীবনের যুদ্ধ। আল্লাহতালা সবাইকে সে পর্যন্ত ভালো রাখুক এই দোয়াই কামনায় আজকের মত শেষ করছি। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।