মোঃ ওসমান গনি
"স্বাধীনতার ৫০ বছরে তারুণ্যের ভাবনা" প্রিয় জন্মভূমি, বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। যাদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল আজকের এই স্বাধীনতা, তাদের বেশির ভাগই ছিলেন বাংলার তারুণ্য। দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে এ দেশের তারুণ্যই সবচেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাঙালির জাতিগত যতটুকু অর্জন তার মূলে রয়েছে তারুণ্যের অদম্য ও ঐক্যবদ্ধ শক্তি। তুমি অগ্নিগর্ভা...!! বাংলার লাখো শহীদের রক্তেভেজা সুশীতল বিছানা। ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পেলাম মা, মাটি ও দেশ; চির শান্তির ঠিকানা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে মুছে যাক গ্লানি হিংসার বাধা পেরিয়ে নতুন সূর্যের উদয় হোক জয় বাংলার। চাই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। যেখান সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে তার ধর্ম ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করতে পারবে। তারুণ্যের চোখে এই বাংলা অপার সম্ভাবনার। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জন্ম নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়া ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করে ধনসম্পদ বাড়িয়ে ধনী দরিদ্রের বৈষম্য সৃষ্টি করা এসব চায়না তারুণ্য। এছাড়া আইনের শাসন, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা তরুণদের মৌলিক অধিকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তথাকথিত কোটা ব্যবস্থা আমাদের সাধারণ মানুষের জীবন ব্যবস্থাকে চ্যালেন্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শতশত বছরের সংস্কৃতি আজ অপসংস্কৃতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আধুনিকতার নামে তা সরকার নিয়ন্ত্রণ করছেনা। ফলে সভ্যতা বিতাড়িত হচ্ছে, যা আদর্শ তরুণ-তরুণীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর হলেও মুক্তি মেলেনি এদেশের সাধারন মানুষের। আজীবন শোষিত হয়েই যাচ্ছে এ জাতি। শুধু সময় আর দল বদলের পালা। মেলেনি অর্থনৈতিক মুক্তি। কিছু সংখ্যক সুবিধা ভোগীরা স্বাধীনতার সুফল নামক মানচিত্রটিকে ভূলন্ডিত করছে। সংবিধানে রাজনৈতিক শ্লোগানে জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস দেখিয়ে নিজেরা ক্ষমতার ভাগাভাগি করে সাধারণ মানুষকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে গনতন্ত্রের অধিকার, নাগরিক অধিকার ও মৌলিক অধিকারসমুহ। হে বাংলাদেশ; স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে হলেও এইবার আমাদের তরুণ সমাজকে মুক্তি দাও। স্বাধীনতা অর্জন করেছিলো আমাদের পূর্ব পুরুষেরা, কিন্তু স্বাধীনতা রক্ষা করতে আমারা কি আদৌ পেরেছি? দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার কাক্ষিত সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হলে নতুন প্রজন্মকে মেধা মননশীলতা, দেশপ্রেম ও মানবতার প্রেরণায় মনোবল নিয়ে অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল যুগে তরুণ প্রজন্ম ভোগবাদী ধারণার বেড়াজালে বন্দী। জাতীয় নেতৃত্বের শূন্যতার অভাব পূরণে বিকল্প নেতার অভাব রয়েছে। জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলাদেশ নিয়ে এবং অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য জনবান্ধব কিছু ভাবছে কি? শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেলেও তা মাধ্যমিক পর্যায়েই এখন সীমাবদ্ধ রয়েছে। উচ্চশিক্ষায় বিশেষ করে প্রকৌশল শিক্ষায় নারীরা এখনো উল্লেখযোগ্য হারে পিছিয়ে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই নারীর ক্ষমতায়ন ঘটলেও, নিরাপত্তাহীনতা এখনো প্রকট। শ্রম ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য, পারিবারিক পর্যায়ে নিরাপত্তা, অধিকার কিংবা জাতীয় উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণ বর্তমান সময়ে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এই জীবন খুবই অভিমানী- পিছনে সাপোর্ট দেবাৱ কেউ না থাকলে নিজ যোগ্যতাৱ বলে এগিয়ে যাওয়া শ্ৰেয়। তবে হ্যা! আমি ব্যর্থ এটা না ভেবে ব্যর্থতার জ্বাল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে অগ্ৰসর হওয়া চাই। অজানা এক ইতিহাস রচনায় আমি পুরোপুরি ব্যর্থতা খুঁজে পাই। তাই তো পরিবেশবাদীরা বলে থাকেন- গাছ লাগান,পরিবেশ বাঁচান। বিজয়ের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে যেমন অসীম ঘাটতি, অসামঞ্জস্যতা আর অক্ষমতার দেখা মেলে; তেমনিভাবেই কতগুলো প্রাপ্তি আর শক্তির জায়গাও তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। আমরা একটি বিজয় পেয়েছি এটি পরম গৌরবের। সামগ্রিকভাবে অনেক বেশি তৎপরতা প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বড় চাহিদার জায়গা তৈরি হয়েছে দেশের দুর্নীতি নির্মূলকরণে। রাষ্ট্রের উচিত হবে অগ্রসর বিষয়গুলোকে যথাযথ গতিতে রেখে অসামঞ্জস্যতার দিকগুলোয় কঠোর নজরদারি করে অর্জিত বিজয়কে সমুন্নত রাখা। জীবনের প্ৰতিটি মূহুর্ত অতীব গুনবান। কেননা, হেলা-অবহেলায় নয়,ব্যস্ততায় কাটুক মানবজীবন। ভালো থাকুক অপরুপ সৌন্দয্যে গড়া প্রিয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তুমি- দ্বিবাস্বপ্ন নও, রক্তিম আলোয় আলোময় বাংলাদেশ তুমি- চোখের স্বপ্ন, কৃষ্ণচূড়ার প্রেরণায়। ০৬.১২.২১ শিক্ষার্থী, মুহাম্মদ ওসমান গনি ইংরেজি সাহিত্য (২০১৭-১৮) সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা