বিজয় এক বছর

MD Hamidur Rahman

আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন হলো ২০১৭ সালের আট এ জুন। আমি সুদূর আফ্রিকার মালি দেশের কেদাল শহরের সেনা ক্যাম্পে থাকতাম। যা কি না, সাহারা মরুভূমির এক টা অংশ । আমার মিশন জীবনের কয়েকটা মাস কেটেছে ভালো ভাবেই । আমার বুঝি না যুদ্ধ কি? কি এর ভয়াবহতা । কত মানুষের প্রাণ নিতে পারে । আমার ছিলাম এক জন অগ্নি নিবাপক হিসেবে। আমার কাজ ছিল সেই ক্যাম্পের অগ্নি নির্বাপকের দায়িত্ব। আট এ জুন ২০১৭ সালের রমজান মাস। প্রতিদিনের মত সেই দিন রোজ রেখেছিলাম। সারাদিন রোদরের কাজ করে, কান্তি শেষে ইফতার করার জন্য বসে আছি এবং মাগরীবের আযান দিবে, ঠিক এই সময়ে বেজে ওঠে যুদ্ধের সাইরান। চার দিক থেকে বোমা হামলা হচ্ছে আমাদের ক্যাম্পে । এমতো অবস্থায় কি করবে বুঝতে পারছি না। ভাগ্য আমাদের ভালো কারণ আমরা বাংকারের ভিতরে ছিলাম । সকলে বাংকারের ভিতরে এক কোণে বসে আল্লাহকে ডাক ছি। কিন্তু বেশি সময়ের জন্য আমরা ভালো ছিলাম না । ডাক পড়েছে ক্যাম্পের হেড কোয়ার্টারে আগুন লেগেছে , যেতে হবে । আমারা যারা ফায়ার ফাইটার ছিলাম, তারা আগে থেকেই তৈরি ছিলাম । এই বোমা হামলার সময় আমাদের কে আগুন নিবাতে বাহিরে যেতে হবে। খুব ভয়ে ভয়ে মনে সাহস নিয়ে আমরা বাহির হলাম। বাহির হয়ে দেখি চার দিকে শুধু আগুন আর আগুন। মানুষের চিৎকার, কালো ধোঁয়া আকাশ অন্ধকার হয়ে গেছে । তার পরেও আমাদের যেতে হবে । আমরা ফায়ারের গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি, আর ভয়ে ভয়ে চারদিকে তাকিয়ে দেখছি যুদ্ধের নির্মমতা । এর মধ্যে মাথার উপর দিয়ে দুটো রকেট র্লান্চার গিয়ে পড়ে আমাদের আগে । ভয়ের কারণে গাড়ি থামিয়ে দি। তার পরেও আমাদের যেতে হবে । আমরা হেড কোয়ার্টারে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করি। এর মধ্যে আমাদের গাড়ি পানি শেষ হয়ে গেছে বালি ও কাপড় দিয়ে অনেক চেষ্টার পর নিয়ন্রণে আসে । এই দিক দিয়ে আর অনেক গুলো বোমা পড়ে । কিন্তু ভয় কোথাই হারিয়ে গেছে বুঝতে পারি নেই । সকালে আমাদের প্রশংসা করলে এবং সাধুবাদ জানাচ্ছিল। আমাদের কাছে আনন্দের সীমা ছিল না। শত কষ্টের মাঝে সেই দিন নিজেকে একজন বীর মনে হচ্ছিল । এই খবর আন্তজাতিক বিভিন্ন প্রত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং আমরা দেশের জন্য কিছু টা সুনাম অর্জন করতে পারেছি সেটা আমার বিজয়ী অর্জন । সেই এক বছরে অনেক ঘটনা ঘটেছে , তার মধ্যে থেকে এক টা ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম । সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল আজও শরীরের লোম খাড়া হয়ে যায়।