ওযাসিব ইসলাম আসিফ
বীর বাঙালি লেখকঃ ওয়াসিব ইসলাম আসিফ পৃথিবীতে অনেক মানুষ রয়েছে যারা শুধু দেশের জন্য কাজ করে গেছে এবং দেশের জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত বিসর্জন দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছে। যাদের কখনো দেশের মানুষ ভুলে না। দেশের প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে তাদের স্থান। প্রতি বছরেই তাদের স্বরনে দেশ ব্যাপি শোক দিবস পালিত হয়ে থাকে। তেমনি এক বীর পুরুষের আত্নজীবনী নিয়ে এই গল্পের শুরু। উনিশ দশকের শুরুর দিকে আমাদের দেশে একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করে মুজিব।ছোট থেকেই সে মানুষকে অনেক ভালো বাসতেন। সে সময় দেশে অভাব অনাটন লেগেই ছিলো। দুঃখ দুর্দশাতে ভরে গিয়েছিলো আমাদের দেশ।তখন ছোট বয়সেই তিনি গরীব মানুষের পাশে দারিয়ে ছিলেন। শিতের সময় নিজের পরনের চাঁদর এক বৃদ্ধাকে দিয়েছিলেন তার শিত নিবরনের জন্য। তখন মুজিবের মা মনে মনে ভেবেছিলেন আমার ছেলে নিশ্চই একদিন দেশের জন্য ভাল কিছু করবে। এবং দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। সময়ের সাথে সাথে মুজিব শিক্ষা জীবনে এগিয়ে যেতে লাগলো। এবং দেশের মানুষের কথা ভাবতে শুরু করলো কিভাবে দেশের উন্নয়ন ঘটানো যায় এবং দেশের মানুষের অভাব অনাটন দুর করা যায়।যাতে বাঙ্গালী জাতির না খেয়ে মরতে না পারে। মাধ্যমিক পাস করার পর মুজিব উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি হয়। এবং সেথান থেকেই শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবন। তার জীবনের মুল উদ্দেশ্য ছিলো। দেশের মানুষের জন্য ভাল কিছু করতে পারে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দলনে মুজিব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। সেখানে রাজ পথে ছাত্রদের সাথে পাকিস্থানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে মিছিলে অংশ গ্রহন করে। তিনি সাধারণ মানুষকে মিছিলে অংশ গ্রহন করতে উদ্বুদ্ধ করে। এবং ১৯৫২ সালের ২১ মার্চ রাষ্ট্র ভাষা বাংলা করতে সফল হয়। কিন্তু সেখানেই নয় এর পরে ১৯৫৪ সালে মুজিব যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষি,সমবায়, পল্লি উন্নয়ন মন্ত্রী নির্বাচিত হয়। কিন্তু তাদের সরকার মাত্র ৫৬ দিনের স্থায়ী ছিলো। তবু সে ৫৬ দিনেই দেশের মানুষের কথা ভেবেছে তাদের ভালোরর জনন্য কাজ করেছে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্য ক্রমে বাড়ছিলো। এই চরম বৈষম্য নিরসনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে মুজিব পুর্ব পাকিস্থানের অবিসংবাদিত জননেতায় পরিণত হয়েছিলো। তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড রুদ্ধ করার জন্য শাসকগোষ্টী বারবার তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে। এর পরেও তিনি দেশের মানুষের জন্য লড়ে গেছেন। এরপর মুজিব দেশের মানুষের ভালোর জন্য ১৯৭০ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। সেই নির্বাচনে মুজিবের দল মানে আওয়ামী লীগ অভূতপূর্ব বিজয় লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্থান সেই নির্বাচন মেনে নেয়নি তার কারনে দেশের মাননুষের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এবং তার ফলেই শুরু হয় যুদ্ধ। ১৯৭১ সালে মুজিবের ডাকে দেশের মানুষ অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এর পরে মুজিব ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসভায় যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, তা বাঙালি জাতির জীবনে বিশেষ স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে পরিগণিত হয়। ১৮ মিনিটের ভাষণ ছিলো বাঙালি জাতির দিক নির্দেশনার প্রতীক। মুজিব ভাষণে বলেছিলো.. ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়র আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রন্জ্ঞিত হয়েছে।আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়,বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়.......... পরিশেষে মুজিব বাংলার মানুষকে বলেন প্রত্যেক গ্রাম, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো।এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়াড়াবো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা। মুজিবের ভাষণ দেশের মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করে তার ফলে বাঙালি জাতি মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং সেই যুদ্ধে মুজিবের অবদান ছিলো অনেক। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় আমার দেশ।কিন্তু তখন মুজিব পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলো। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তাকে পাকিস্তান কৃতপক্ষ মুক্তি দিলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহন করে।পরবর্তীকালে মুজিব প্রধান মন্ত্রী নিযুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর অচিরেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠন করতে এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চাপ সামললাতে মুজিববকে হিমসিম খেতে হয়। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট প্রত্যুষে একদল বিপথগামী সেনা মুজিবকে তার পরিবার সহ হত্যা করে। এবং তখন আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যায় বাংলাদেশের বীর বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মিজিবর রহমান। তিনি দেশের জন্য নিজের জীবন ত্যাগ করে গেছেন। এবং ইতিহাসের পাতায় মুজিবের নাম স্বর্নাক্ষরে লেখা হয়ে আছে।যাকে মানুষ চিরদিন মনে রাখবে। এ পৃথিবী যতদিন থাকবে ঠিক ততদিন আমাদের মনের মাঝে মুজিব থাকবে। আমরা গর্বিত বাঙালি যে মুজিবের মত এক বীর বাঙালিকে আমাদের বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে পেয়েছি। মুজিব তুমি মরেও অমর হয়ে আছো আমাদের দেশের প্রতিটা মাননুষের হৃদয়ে। তুমি হলে কীর্তিমান তোমার মৃত্যু হতেই পারে না................!! -------সমাপ্ত--------